‘রমজান ও ঈদ সামনে রেখে শর্ত সাপেক্ষে রোববার অর্থ্যাৎ ১০ মে থেকে দোকান-পাট ও শপিংমল খোলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কায় রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় ৯৫% শপিংমল খুলবে না।’
শনিবার, ৯ই মে ২০২০ তারিখে, এ কথা বলেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমল বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঝুঁকি এড়াতে অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে নিউ সুপার মার্কেট ছাড়া সব শপিংমলই বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীসহ প্রায় সব বিভাগেই শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা একেবারেই চলতে পারছেন না, সেসব দোকানদারের দোকান খোলা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এর সংখ্যা খুব একটা বেশি হবে না।
এদিকে, শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় সর্বপ্রথম বসুন্ধরা সিটি শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
এরপর যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনি চকসহ গুরুত্বপূর্ণ ১১টি মার্কেট বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া ঢাকার বাইরে সিলেট, চট্টগ্রাম কুমিল্লা, খুলনা, রাজশাহীসহ প্রায় সব জেলা শহরে শপিংমল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অপরদিকে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের আগে বাজার করার জন্য শপিংমল খুলে দিলে ভিড় বাড়বে। আর এই ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন।
শুধু তা-ই নয়, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক জরিপে বলা হয়েছে, দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ চান না শপিংমল খোলা হোক। শপিংমল খুলে দিলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে বলে তারা মনে করেন।
তবে শনিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও তালতলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি নির্দেশনা মেনে দোকান খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রচুর সংকটের মধ্যে আমাদের দিন যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, এটি কিছুটা হলেও আমাদের সংকট কাটাতে সহায়তা করবে। তাই এই বন্ধের মধ্যেও আমরা দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছি। যাতে নির্ধারিত সময়ে সরকারের বিধি-নিষেধ মেনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে পারি।
গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকান-পাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় এক ঘণ্টা কমানো হয়।
সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকান-পাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।
বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।