শ্রমিকদের বেতন দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার তহবিল থেকে ঋণ নিতে আবেদন করেছেন ২ হাজার ৪৪ গার্মেন্ট মালিক। করোনাভাইরাসের সংকট মোকাবেলায় ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকার ঋণ পেতে ৪৭টি ব্যাংকের মাধ্যমে এসব আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়েছে, খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম রোববার (১০ মে ২০২০) বলেন, আবেদনের বিপরীতে ইতোমধ্যেই এপ্রিলের বেতন বাবদ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ২ মে ছিল আবেদনের শেষ দিন। তিনি আরও জানান, এপ্রিলে যেসব শ্রমিক নিয়মিত ডিউটি করেছেন, তারা এখান থেকে শতভাগ বেতন পাবেন; আর যারা অনিয়মিত ছিলেন তারা পাবেন ৬৫ শতাংশ।
৪৭টি ব্যাংকের ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকার মধ্যে ৪৭০ কোটি টাকার চাহিদা দিয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক। ১৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দিতে এ টাকার আবেদন করেছে ব্যাংকটি। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, ৪৭০ কোটি টাকার মধ্যে এপ্রিলের জন্য পেয়েছি ১৪০ কোটি টাকা। এ টাকা দেয়া শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে শেষ হবে।
ইসলামী ব্যাংক শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন দিতে চেয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক এক মাসের বেতন বাবদ ১৭২ কোটি টাকা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া বলেন, ইতোমধ্যে ১৭২ কোটি টাকা শ্রমিকদের হিসাবে পঠানো হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক ১৩টি কারখানা শ্রমিকের মজুরি দেয়ার জন্য ৩০ কোটি টাকার আবেদন করেছে। পুরো টাকা পেয়েছে। রোববার কিছু টাকা ছাড় করা হবে। বাকি টাকা চলতি সপ্তাহে দেয়া হবে বলে জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আতাউর রহমান প্রধান।
একই চিত্র অগ্রণী ব্যাংকেও। ২০৯ কোটি টাকা চাওয়ার বিপরীতে ৬৫ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ১৫ কোটি টাকা শ্রমিকদের হিসাবে দেয়া হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে ৫০ কোটি টাকা দেয়া হবে। তিনি বলেন, পুরো টাকা কারখানার মালিককে জানিয়ে তার নিজের বা প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ সৃষ্টি করা হবে। আর বেতনের টাকা সরাসরি যাবে শ্রমিকের হিসাবে।
রূপালী ব্যাংক ৪১টি কারখানা শ্রমিকের মজুরি দিতে পেয়েছে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির আন্তর্জাতিক বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আরও কিছু তথ্য চেয়েছি। সে তথ্য পেলে চলতি সপ্তাহে এপ্রিলের বেতন চলে যাবে শ্রমিকের হিসাবে। প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা চাহিদা দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। ১২২টি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দিতে এ টাকার আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া অন্য ব্যাংকও প্রণোদনার টাকা থেকে শ্রমিকদের বেতন দেয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে।